রুগীর নাম মুরসেদ আলাম। বয়স ১৮ বছর। বাড়ি মালদা জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। শিশুকাল থেকে সে রাতে বিছানায় প্রস্রাব করে এবং দিনের বেলাতেও তার ফোটা ফোটা প্রস্রাব হয়। হাসলে বা কাশি হলে প্যান্টে প্রস্রাব হয়ে যায়। প্রস্রাবে জ্বলন অনুভূত হয়। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করানোর পরও কোনো উপশম হয়নি। অবশেষে, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে সে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার জন্য আমার কাছে আসে।
উল্লিখিত সমস্যাগুলোর ভিত্তিতে তাকে প্রথমে কসটিকাম ৩০ (৬ ডোজ) দিনে তিনবার করে দুই দিন এবং এক মাসের জন্য রুব্রাম ৩০ দেওয়া হয়। পাশাপাশি আলট্রাসাউন্ড করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
১৪ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়:
- Urinary bladder: ফুলে আছে।
- Bladder wall: সামান্য মোটা এবং অনিয়মিত।
- Large calculus: মূত্রথলির মধ্যে ৪৪.৬ মিমি আকারের বড় একটি পাথর রয়েছে।
- Diagnosis: মূত্রথলিতে বড় পাথর এবং সিস্টাইটিস।
২৮ অক্টোবর ২০১৮: এক মাসের মধ্যে রোগীর কোনো উন্নতি না হওয়ায় নিম্নলিখিত হোমিওপ্যাথিক লক্ষণগুলো সংগ্রহ করা হয়:
১. ঝড়-বৃষ্টিতে ভয়।
২. একা থাকতে ভয়। সবসময় কারো উপস্থিতি প্রয়োজন।
৩. ঠান্ডা পানীয়, ডিম, এবং মিষ্টি খাবার পছন্দ।
উপরোক্ত লক্ষণ অনুযায়ী, ২৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে তাকে ফসফরাস ৩০ (৬ ডোজ) দিনে তিনবার করে দুই দিন এবং নিহিলিনাম ৩০ দিনে দুইবার করে এক মাসের জন্য দেওয়া হয়।
২৬ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে রোগীর বেশ কিছু লক্ষণে উন্নতি দেখা যায়।
- হাসি বা কাশির সময় প্রস্রাব হওয়া কমে গেছে।
- বিছানায় প্রস্রাবের সমস্যাও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
রোগীর দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সম্পূর্ণ ভালো হওয়ার জন্য তাকে কিছুদিন অন্তর পুনরায় ফসফরাস দেওয়া হয়েছে। এখন সে শিশুকাল থেকে চলতে থাকা প্রস্রাবের অসাড়তা এবং জ্বালা থেকে পুরোপুরি মুক্ত। তার কোনো অসুবিধা নেই।
তবে, ৭ মে ২০১৯ তারিখের রিপোর্টে দেখা যায় মূত্রথলির পাথরের আকারে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
- Calculus size: ৪৬ মিমি।
- Wall thickness: স্বাভাবিক।
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় অনেক সময় কিডনি বা মূত্রথলির পাথর গলিয়ে ফেলা সম্ভব হলেও এত বড় পাথর গলানো সম্ভব হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। তাই রোগীকে অপারেশনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।