রোগী দিবাকর প্রামানিকের বয়স ১৯ বছর। গত দুই বছর ধরে মাঝে মাঝে তার পেটে ব্যথা ও বমি হচ্ছিল। গ্যাসের ব্যথা ভেবে গ্রামের চিকিৎসায় নিরাময়ের চেষ্টা চলছিল। কিন্তু শেষ তিন মাসে ব্যথা অসহনীয় হয়ে উঠলে, এক চিকিৎসক তাকে আলট্রাসাউন্ড করানোর পরামর্শ দেন। ১২/০১/২০১৫ তারিখের রিপোর্টে ধরা পড়ে যে তার বাঁ মূত্রনালীতে ৬ মি.মি. এবং গলব্লাডারে ৮.৩ মি.মি. পাথর রয়েছে। এই অবস্থায় চিকিৎসক তাকে অপারেশনের পরামর্শ দেন।
তবে দিবাকর তার কিছু প্রতিবেশী বন্ধুর পরামর্শে ২২/০১/২০১৫ তারিখে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার জন্য আমার কাছে আসেন। ছয় মাস ধরে তার চিকিৎসা চলে। লক্ষণ অনুযায়ী তার জন্য লাইকোপডিয়াম ওষুধ নির্ধারণ করা হয়। শুধু এই ওষুধেই তার ব্যথা ও বমি ভালো হয়ে যায়। পরে অবশ্য প্রয়োজন অনুযায়ী সালফার ও আর্সেনিক ওষুধও দিতে হয়। চিকিৎসা চলাকালীন তার কোনো ব্যথা ছিল না, এবং তিনি সব দিক থেকে ভালো বোধ করছিলেন।
এর মধ্যেই তার এক নিকট আত্মীয় তাকে বোঝান যে গলব্লাডারের পাথর হোমিওপ্যাথিতে সেরে ওঠে না। তাই ৩০/০৬/২০১৫ তারিখে এক শল্যচিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি আলট্রাসাউন্ডসহ বিভিন্ন টেস্ট করিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হতে বলেন। ভর্তি হওয়ার পর টেস্টের রিপোর্ট আসে, যেখানে দেখা যায় তার আলট্রাসাউন্ড একেবারে স্বাভাবিক এবং কোনো পাথর নেই। তাই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
দীর্ঘ চার বছর দিবাকর ভালো ছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালের শেষের দিকে তার আবার পেটে ব্যথা ও বমি শুরু হয়। ব্যথা এবং বমি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি বেশ কিছু টেস্ট করানোর পরামর্শ দেন। ২০/১০/২০১৯ তারিখের রিপোর্টে গলব্লাডারে পাথর ধরা পড়ে না, তবে এন্ডোস্কোপিতে ইরোসিভ গ্যাস্ট্রাইটিস ধরা পড়ে। এরপর দেড় মাস চিকিৎসা চললেও কোনো উন্নতি হয়নি। তার ওজন কমতে থাকে, আর তিনি দুর্বল হয়ে পড়েন।
০৯/১২/২০১৯ তারিখে আবার তিনি আমার কাছে আসেন। হোমিওপ্যাথি লক্ষণ অনুযায়ী তাকে লাইকোপডিয়াম ওষুধ দেওয়া হয়। দুই মাসের মধ্যেই তার পেটব্যথা ও বমি ভালো হয়ে যায়। শারীরিক দুর্বলতা কাটানোর জন্য পরবর্তী কয়েক মাস সালফার, ফসফরাস, এবং আর্সেনিক এল্ব ওষুধ প্রয়োজন হয়। এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ।